
আদর্শিক ভিত্তি
- আবার ‘অখণ্ড ভারত’ প্রতিষ্ঠিত হবে: শীর্ষ বিজেপি নেতা, আমার দেশ, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫
জনগণের শুভবোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান আবার ‘অখণ্ড (অবিভক্ত) ভারতে’ পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির একজন শীর্ষ নেতা। প্রায় ৬০ বছর আগে অবিভক্ত ভারত ভেঙে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বাধীন দেশের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে পাকিস্তান ভেঙে জন্ম হয় বাংলাদেশের। বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব আলজাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে জনগণের শুভবোধের মাধ্যমে আবার অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠিত হবে। আলজাজিরার ‘হেড টু হেড’ অনুষ্ঠানে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) আজো বিশ্বাস করে যে ৬০ বছর আগে ঐতিহাসিক কারণে যেসব অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে তা জনগণের শুভেচ্ছায় আবার একত্রিত হবে এবং অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠিত হবে,’ বলছিলেন রাম মাধব। আরএসএস বিজেপির আদর্শিক শাখা হিসেবে পরিচিত। ‘একজন আরএসএস সদস্য হিসেবে আমিও ওই দৃষ্টিভংগী পোষণ করি,’ যোগ করেন রাম মাধব।
তবে একথার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তার মানে এই নয় যে কোনো দেশকে যুক্ত করতে আমরা কোনো দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব। যুদ্ধ ছাড়া জনগনের সম্মতিতেই এটা হতে পারে।’
চলতি বছরের শুরুর দিকে এক বিবৃতিতে তিনি ভারতকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর ব্যাখ্যাও দেন রাম মাধব। ‘এটা এমন একটা ভূখণ্ড যেখানে বিশেষ ধরনের জীবনধারা, বিশেষ ধরনের সংস্কৃতি এবং সভ্যতার পরিচর্যা করা হয়। আমরা সেটাকেই হিন্দু বলছি-আপনার কোনো আপত্তি আছে কি?’ ‘ভারতে একটিই সংস্কৃতি আছে। আমাদের সংস্কৃতি এক, জনগণ এক এবং এক জাতি,’ আলজাজিরার মেহেদি হাসানকে বলছিলেন তিনি।
প্রথম আলো, এনিটিভি সহ অন্যান্য জাতীয় দৈনিকও একই খবর প্রচার করেছে।
- ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের আসল চরিত্র, বদরুদ্দীন উমর, যুগান্তর, ২১ জুন ২০১৫
ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সভাপতি মোহন ভগবৎ গত ১২ জুন মথুরায় তাদের দলের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উপলক্ষে দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, ভারত, বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের প্রত্যেক নাগরিকই হিন্দু! এই তত্ত্ব এবং একই সঙ্গে বিপজ্জনক বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র। এ বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। আর এ বিশ্বাসেই আমাদের আটকে থাকতে হবে। নিজেদের এলাকা ভিন্ন করেই নিতে পারি আমরা। কিন্তু তাতে ভারত যে একটি হিন্দু জাতির দেশ, সে বিষয়টি কোনোভাবেই বাতিলের খাতায় ফেলা যেতে পারে না (যুগান্তর, ১৪.০৬.১৫)। তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ নিজেদের হিন্দু বলেন। কেউ বলেন, তারা ভারতীয়। এমন মানুষও আছেন যারা নিজেদের আর্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং অনেকে বলেন, তারা মূর্তিপূজায় বিশ্বাসী নন। কিন্তু এসব বক্তব্যে ভারত যে একটি হিন্দু রাষ্ট্র, তা মনে করতে কোনো বাধা নেই।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশে যারাই বাস করেন, তাদের প্রত্যেকেই হিন্দু জাতির অংশ। তাদের পৃথক নাগরিকত্ব থাকতে পারে। কিন্তু তাদের জাতীয়তা হিন্দুত্ব। নিজের বক্তব্যের যৌক্তিকতা প্রমাণের জন্য তিনি ইতিহাসের দিকে তাকানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, স-কে হ হিসেবে উচ্চারণ করত আরবীয়রা। সে কারণেই তারা আমাদের হিন্দু বলত, কারণ আমাদের দেশে সিন্ধু নামের একটি নদী ছিল। এটা সেই এলাকায় ছিল যেখান থেকে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান আলাদা হয়ে যায়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয় বাংলাদেশ। এ কারণে ওই অঞ্চল দুটোতে বসবাসকারী মানুষের নাগরিকত্ব আলাদা হয়ে গেছে। কিন্তু তাই বলে তারা তাদের বাড়িঘর কিংবা জাতীয়তা ত্যাগ করেননি। সেজন্যই আমি বলি, তাদের জাতীয়তাবাদ এখনও একই রয়েছে।” এ পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের দলের লক্ষ্য ও কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরএসএসের ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য এটাই সঠিক সময়। আরও উঁচু ইমারত তৈরির জন্য আরও মজবুত ভিত তৈরি করতে হবে আমাদের। (যুগান্তর, ১৪.০৬.১৫)।
দাবী
- ২০২০ সালের মধ্যে ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হবে-‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অশোক সিংহাল, ভোরের কাগজ, ১৯ জুলাই ২০১৫
২০২০ সালের মধ্যে ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এর মাত্র দশ বছর পর গোটা বিশ্ব জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হবে হিন্দু শাসন। এই ভবিষ্যৎবাণী করেছেন ভারতের কট্ট্ররপন্থি দল ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’য়ের নেতা অশোক সিংহাল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির ঐতিহাসিক জয়ের মধ্য দিয়ে এই বিপ্লব শুরু হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
- ভারত কার্যত একটি হিন্দু রাষ্ট্র: দাবি সিনিয়র বিজেপি নেতার, রেডিও তেহরান, 07 মার্চ 2016
- বাংলাদেশ, পাকিস্তানও হিন্দু রাষ্ট্র– আরএসএস প্রধান, এন টিভি, ১৩ জুন ২০১৫
ভারতের কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলোর মোর্চা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগত বলেছেন, পুরো ভারত উপমহাদেশই হিন্দু রাষ্ট্রের অংশ। সে হিসেবে বাংলাদেশ, পাকিস্তানও হিন্দু রাষ্ট্র। স্থানীয় সময় শুক্রবার উত্তর প্রদেশের মথুরায় শ্রীজী বাবা স্বরস্বতী শিশু মন্দিরে সংঘের একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ভগত এ কথা বলেন। ইন্ডিয়া টুডে ডটইনের খবরে বলা হয়, মোহন ভগত তাঁর বক্তব্যে গোটা উপমহাদেশকে হিন্দু রাষ্ট্র প্রমাণে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত হাজির করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র। এ ব্যাপারে আমাদের সংশয় থাকা উচিত নয়। একই সঙ্গে এ বিশ্বাসের ওপর স্থির থাকা উচিত। অন্য অনেক ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারি। তবে ভারত একটি হিন্দুরাষ্ট্র- এ বিষয়টি থেকে সরে আসা যাবে না।’আরএসএস প্রধান বলেন, একজন লোককে বিভিন্ন ভাবে চিহ্নিত করা যায়। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করে। কেউ কেউ বলে ভারতীয়। অন্য অনেক লোক আছে যারা নিজেদের আর্য বলে এবং কেউ কেউ বলে তারা মূর্তিপূজায় বিশ্বাস করে না। কিন্তু ভারত হিন্দুরাষ্ট্র এটা মেনে নিতে এসব বিষয় কোনো সমস্যা তৈরি করে না।’মহন ভগত বলেন, ‘ভারত উপমহাদেশে যারা বাস করছে তারা হিন্দু রাষ্ট্রের অংশ। তাদের বিভিন্ন নাগরিকত্ব থাকতে পারে। তবে তাদের জাতীয়তা হিন্দু।’
- ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে হিন্দু ধর্মভিত্তিক ৩৭ রাজনৈতিক দল, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, ৩১ জানুয়ারি ২০১৪
সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপে দেশ ভারতে হিন্দু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলই রয়েছে কমপে ৩৭টি। এর মধ্যে ১০টি সর্বভারতীয় ভিত্তিতে এবং ১০টি আঞ্চলিক দল হিসেবে কর্মতৎপর বলে জানা গেছে। ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেতা থাকলেও এসব রাজনৈতিক দল বৈধভাবেই কাজ করছে। সর্বভারতীয় হিন্দু ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে, অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভা, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু জনজাগ্রুতি সমিতি, অখিল ভারতীয় হিন্দু শক্তি দল, অখিল ভারতীয় জন সংঘ, অখিল ভারতীয় রাম রাজ্য পরিষদ, অখিল ভারতীয় শিবসেনা রাষ্ট্রবাদী, অখন্ড হিন্দুস্তান মোর্চা, আপনা হিন্দু রামভক্ত পার্টি, আর্যসভা, ভারতীয় হিন্দু সেনা, ভারতীয় জনশক্তি, ভারতীয় স্বদেশী সংঘ, হিন্দু একতা আন্দোলন পার্টি, হিন্দু প্রজা পার্টি, হিন্দু সমাজ পার্টি, হিন্দু শিবসেনা, হিন্দু স্বরাজ সংগঠন, রাষ্ট্রীয় হিন্দু সংগঠন, রাষ্ট্রীয় হিন্দু মোর্চা, রাম রাজ্য মার্গ, রাম সেনা রাষ্ট্রবাদী, সমরাথ ভারত, শিব রাজ্য পার্টি, শিবসেনা প্রভৃতি।
অন্যদিকে, আঞ্চলিক হিন্দুবাদী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে, অসম ভারতীয় জনতা পার্টি, নিখিল মনিপুরি হিন্দু মহাসভা, হিন্দু মুন্নানি (তামিলনাড়), হিন্দু মাক্কাল কাচ্চি (তামিলনাড়), জনতা পার্টি (দণি ভারত ও মহারাষ্ট্র), তামিলনাড় হিন্দু ভেলালার ইয়থ কাজাঘাম, শ্রী রাম সেনা (কর্ণাটক), ভারতীয় জন পাকসাম (কেরালা), সনাতন প্রভাত (মহারাষ্ট্র ও কেরালা), হিন্দু সংহতি (পশ্চিমবঙ্গ) প্রভৃতি। এসব দলের আরএসএস-এর মতো কোনো কোনো দলের আধাসামরিক বাহিনীর মত বাহিনী রয়েছে। এসব দল প্রধানতঃ ভারতকে একটি হিন্দু দেশে পরিণত করতে কিংবা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে আন্দোলনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হিন্দু ধর্মভিত্তিক দল হিসেবে পরিচয় না দিলেও তারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং তাদের পেছনে শক্তি যোগায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস), শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (বিএইচপি)।
কার্যক্রম
- 1971 Bangladesh war: RAW heroes India forgot to honour, dailyo.in, 16-12-2015
R K YADAV নামে সাবেক র এর এই এজেন্ট দাবী করেছেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করেছে ‘র’, যারা স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে গোয়েন্দা তৎপরতা চালাত। এই পোস্টের বাংলা অনুবাদ পড়ুন ‘র’ এর পরিচালনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ-দাবী সাবেক ভারতীয় গোয়েন্দা যাদব।
যদিও ১৯৭১ সালে ভারতের বিএসএফ এর তৎকালীন আঞ্চলিক প্রধান গোলক বিহারি মজুমদারের মত শেখ মুজিব রহমান একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার বরণের আগে সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমেদ সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের চীনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। চীন যদি সহযোগিতা না করে তাহলেই ভারতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। ( Golak’s Untold Story of Bangladesh Liberation War, By
Well before the 25th March Pakistan army crackdown, Sheikh Mujib had made up his mind that he would not go underground and stay put in his Dhanmondi home in Dhaka. But he had instructed his second in command in Awami League, Tajuddin Ahmed that in case he was arrested or killed, Awami League leaders should “cross over to China” because “India should not be embarrassed under any circumstances. But if China refused to help, Indian help should be sought as a last resort.”
- India’s secret war in Bangladesh, The Hindu, 11/02/2012
Seven months before the December 3 Pakistan Air Force raid that marked the beginning of the war, India’s Chief of Army Staff issued a secret order to the General Officer Commanding, Eastern Command, initiating the campaign that would end with the dismemberment of Pakistan.
ঠিক একই ধরনের কার্যক্রম তারা পরিচালনা করে যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি তাঁদের এক গোয়েন্দা ধরা পরে পাকিস্তানে।
- ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ যাদবের স্বীকারোক্তি, মানবজমিন ডেস্ক, ৩০ মার্চ ২০১৬
এ মাসের প্রথম সপ্তাহে ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ কুলভূষণ যাদব পাকিস্তানের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন হাতেনাতে আটক করে। অনলাইন ডন এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কুলভূষণ যাদব ইরানের সঙ্গে বেলুচিস্তানের সারাবন সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। তার স্বীকারোক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্ট মঙ্গলবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দেশটির তথ্য, সম্প্রচার ও জাতীয় প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী সিনেটর পারভেজ রশিদ, আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল অসীম সালিম বাজওয়া।
সরবরাহ করা ডকুমেন্টে কুলভূষণ যাদব স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, আমি কমান্ডার কুলভূষণ যাদব। ভারতীয় নৌ বাহিনীতে নিয়োজিত একজন কর্মকর্তা আমি। এখন আমি ভারতীয় নৌবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের একজন ক্যাডার। আমার নাম হিসিবে হুসেইন মুবারিক প্যাটেলও ব্যবহার করি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার জন্য তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমি এ নামটি ব্যবহার করি। ১৯৮৭ সালে ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমিতে যোগ দিই। এরপর ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে যোগ দিই ভারতীয় নৌবাহিনীতে। ২০০১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানেই দায়িত্ব পালন করি। এ সময়ে পার্লামেন্টে হামলা হয়। তখন থেকেই আমি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ শুরু করি।
কুলভূষণ যাদব বলেন, আমার বসবাস ভারতের মুম্বই শহরে। এখনও ভারতীয় নৌবাহিনীতে কর্মরত। ১৪ বছর চাকরির বয়স শেষ করে ভারতীয় নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসার হিসেবে আমার অবসরে যাওয়ার কথা ২০২২ সালে। ২০০৩ সালে গোয়েন্দা অপারেশন শুরু করি। ইরানের চাবাহারে চালু করি একটি ছোট ব্যবসা। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে করাচি সফরে আসি। এখানে অবস্থান করি। কেউ তখন আমাকে সনাক্ত করতে পারে নি। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’য়ের জন্য মৌলিক কিছু এসাইনমেন্ট নিয়ে কাজ করি। ২০১৩ সালে আমাকে নিয়ে নেয় ‘র’। তারপর থেকেই আমি বেলুচিস্তান ও করাচিতে এ সংস্থার পক্ষে বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনা করছি। তার মধ্য দিয়ে করাচির আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
আমি ‘র’য়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি অনীল কুমার গুপ্তের লোক ছিলাম প্রকৃতপক্ষে। আমার কাজ ছিল বেলুচিস্তানে বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সহযোগিতায় কর্মকা- পরিচালনা করা। এসব কর্মকাণ্ড ছিল ক্রিমিনাল প্রকিৃতির। এতে মানুষ মারা যেতেন। পাকিস্তানি নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এ প্রক্রিয়ায় আমি বুঝতে পারি যে, বেলুচিস্তানে যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে তাতে ‘র’ জড়িত।
- প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে ‘র’, বাংলামেইল২৪ডটকম, ০৯ এপ্রিল ২০১৬
কোন আওয়াজ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। আর এতে করে প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচ থেকে আস্তে আস্তে মাটি সরে যাচ্ছে, অথচ সেটা উনি জানতেও পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার মুক্তির দাবিতে নাগরিক ছাত্র ঐক্য ও নাগরিক যুব ঐক্য যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বাকশাল সরকারের কাছে কখনো (জনতার) আওয়াজ পৌঁছাবে না। পথের (জনতার) আওয়াজ কোনটা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে, না যাবে- সেটি কোনো বাংলাদেশি গোয়েন্দা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে না। ডিজিএফআই, এনএসআই, পুলিশ সেটা (নিয়ন্ত্রণ) করে না। এটার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ আছে। ‘র’ স্থির করে কোন খবর যাবে, কোথায় যাবে, কাকে জানাতে হবে? এটির মজা হলো, প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচ থেকে আস্তে আস্তে মাটি সরে যাচ্ছে, অথচ সেটা উনি জানতেও পারেন না।’
- ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের দৌরাত্ম্য, বিপন্ন দক্ষিণ এশিয়া, সঞ্জীব বর্মন, ডয়সে ভেলে, 13.11.2015
ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার মৌলিক কাঠামোর ভিত্তিতে আঘাত হানছে হিন্দুত্ববাদীরা৷ এমন পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠছে৷ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মৌলবাদী শক্তি উৎসাহিত হচ্ছে৷
বেড়ে চলা অসহিষ্ণুতার অভিযোগে ভারতের সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, অভিনেতারা সোচ্চার হয়ে উঠছেন৷ দলমত নির্বিশেষে লেখকরা দলে দলে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন৷ অথচ সরকার এর পেছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত দেখছে৷
কখনো অক্ষরে অক্ষরে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয় না বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত৷ ভারতের আজকের প্রবণতা জার্মানিতে নাৎসি স্বৈরতন্ত্রের প্রথম পর্যায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ ভারতে মোদী-বিরোধীদের অনেকেই নাৎসি-বিরোধী যাজক মার্টিন নিম্যোলার-এর মতো ভাবছেন:
‘‘নাৎসিরা যখন কমিউনিস্টদের ধরতে এলো, আমি তখন নীরব ছিলাম৷
আমি তো আর কমিউনিস্ট ছিলাম না৷
ওরা যখন সামাজিক গণতন্ত্রীদের জেলে পুরলো, আমি তখন নীরব ছিলাম৷
আমি তো আর সামাজিক গণতন্ত্রী ছিলাম না৷
ওরা যখন শ্রমিক নেতাদের ধরলো, আমি তখন নীরব ছিলাম৷
আমি তো আর সামাজিক গণতন্ত্রী ছিলাম না৷
ওরা যখন আমাকে ধরতে এলো৷
তখন প্রতিবাদ করার জন্য আর কেউ অবশিষ্ট ছিল না৷’
- বিজেপি নেতার হুমকি : প্রয়োজনে বাংলাদেশকেও ঠাণ্ডা করে দেবো, আমার দেশ ০৪ মার্চ, ২০১৬ এবং মানব জমিন, ৫ মার্চ, ২০১৬
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ উত্তেজক ভাষণ দেয়ায় রীতিমতো দক্ষ। সাবেক এই আরএসএস নেতা গত বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার সিউড়িতে রীতিমতো হুমকির সুরে বলেছেন, যে সব নেতা, অভিনেতা, লেখক, গায়ক, শিক্ষাবিদ উগ্রপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদকে মদত দেবে তাদের ধরে এনে লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে বিজেপি নেতার সদম্ভ ঘোষণা, বোমার বদলে বুলেট দিয়ে পাকিস্তানকে ঠাণ্ডা করে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বাংলাদেশকেও ঠাণ্ডা করে দেয়া হবে। অন্যদিকে তার হুঁশিয়ারি, পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিলেই তাদের মুণ্ডু কেটে কবর দিয়ে দেয়া হবে। ফেসবুকে একটি উত্তেজনাকর পোস্টকে ঘিরে এমনিতেই সিউড়ির কাছে ইলামবাজার এলাকা উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে।
ঠিক এই অবস্থাতেই বিজেপি নেতা মুসলিম (৩৭.০৬ শতাংশ) অধ্যুষিত বীরভূম জেলায় দাঁড়িয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে হিন্দু ভোটকে সংহত করার কৌশল নিচ্ছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। বীরভূমের জেলা শাসকের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সরকার চুপ করে থাকবে না। এখন মোদি সরকার রয়েছে। উগ্রপন্থি বা জঙ্গি যেই হোক না কেন তাদের উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আগে নিরাপত্তা রক্ষী সংঘর্ষে মারা গেলে আমরা শোক জানাতাম। কিন্তু এখন পাল্টা আঘাত হানা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, যারা পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেবে তাদের উপর থেকে ৬ ইঞ্চি কেটে ফেলা হবে। আর তারপর ৬ ফুট নিচে নামিয়ে দেয়া হবে। মনে রাখতে হবে এখন দিন পালটেছে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তার কথায়, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গকে আফগানিস্তান বা সিরিয়া হওয়া থেকে বাঁচাবেই।
- BJP secret meeting on Bangladesh, The Telegraph India, 03/03/2016
Ram Lal, a joint national general secretary of the BJP, held a secret meeting with some opinion-makers from Bangladesh at a resort near Calcutta last week as part of the party’s attempts to understand the ground reality in the aftermath of alleged attacks on minorities across the border.
No one wanted to go on record confirming the meeting but a source in Delhi said: “Dattatreya Hosabale, the RSS’s joint general secretary, had played a role in the meeting, organised as part of the Sangh’s plan of firming up linkages with Nepal, Bangladesh, Sri Lanka, Bhutan and the Maldives.”
“During our meeting, we gave details of the situation of the minority community in Bangladesh. There were also discussions on how to develop stronger bonds between the BJP and our party,” said an Awami League leader who had attended the meeting.
ভারতকে বুঝা সিরিজের বাকী পোস্টগুলো;
- ভারত বাংলাদেশে কী চায়?
- ‘যারা ভারতের শত্রু, তারা বাংলাদেশেরও শত্রু’
- বাংলাদেশ ভারতের বাণিজ্যিক বাজার
- ভারতের সহযোগী উন্নয়ন পথ
- ‘অখণ্ড ভারত’ স্বপ্ন ও ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ বৃত্তি
- ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ভারতীয় রাজনীতি
- বিজেপির বাংলাদেশ বিরোধী রাজনীতি
- ‘বাংলাদেশিদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করছে ভারত’
- হায়দ্রাবাদ থেকে সিকিম হয়ে বাংলাদেশ:নেহেরু ডকট্রিন ও আজকের বাস্তবতা