“বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নাই” বলে একদা যিনি উক্তি করেছিলেন, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তার (উক্তিকারীর) জীবনের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রমাণ করল তিনি সঠিক নন, যদিও বিশ্বাসী জনগনের অনেকেই তার পক্ষে ছিলেন,আছেন এবং থাকবেন।তার ঐ উক্তিতে দেশের এলিট সমাজের অনেকেই মনক্ষুন্ন হয়েছিলেন। মন্ত্রীত্বের প্রভাবে সেইদিন সমাজের এলিটদেরকে ইগনোর করেছিলেন তিনি ও তার দল জামায়াত ইসলামী। তার ফাঁসি কার্যকরের পরপরই দৈনিক প্রথম আলোর শিরোনাম করল; “দম্ভোক্তির পতন নিজেই দেখলেন মুজাহিদ”।আসলেই কি মুজাহিদ (রহ:) দম্ভোক্তি সুরুপ ঐ মন্তব্য করেছিলেন? নাকি ভুলে মুখ ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল কথাটা? যেভাবেই দেখা হউক এই জাতীয় বেঁফাস কথা যে জামায়াতের জন্য নতুন নয় ইতিহাস তার স্বাক্ষ্য।
এটা সত্য যে জামায়াতের নেতাদের মাঝে অন্যান্য দলের নেতাদের মত বেঁফাস কথা কমই শুনা যায়,নেতৃত্ব নিয়েও দলাদলি কম কিন্ত ঐতিহাসিকভাবে যেখানে জামায়াত আটকে গেছে সেই ৭১ ইস্যুতে বেঁফাস কথা বলা মানে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থদের “কাঁটা গায়ে লবনের ছিটা”।৭১ এর স্বাধীনতা নিয়ে বাংলাদেশীদের আবেগের জায়গাটুকু জামায়াত আজো বুঝতে পেরেছে বলে সন্দিহান।এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল,এত এত মানুষের কোরবাণী,ত্যাগ,সম্পদহানী কিছুই তাদেরকে স্পর্শ করেনি।তারা ইনিয়ে বিনিয়ে যা বলার চেষ্টা করে সেগুলো কোন বুদ্ধিবৃত্তিক, সুস্থ যুক্তি নয় বরং দল ও নেতাদের রক্ষা করাই মুখ্য, ৭১ এর অর্জন হয়ে পরে তখন গৌণ।
আমরা দেখতে পাই আব্বাস আলী খান (রহ:) ১৯৭৯ সালে জামায়াত যখন প্রকাশ্যে আসে তখন সাংবাদিক সম্মেলনে ঐরকমই একটি বেঁফাস মন্তব্য করে পুরো দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের খেপিয়ে তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমরা ৭১ এ কোন ভুল করিনি”। মরহুম জিয়াউর রহমানকে তখন বাধ্য হয়ে জামায়াতকে কঠোর ভাষায় ধমক দিতে হয়েছে।সেই থেকেও জামায়াত নেতারা শিখেছেন বলে মনে হয়নি।ঠিক একই অবস্থা হয়েছে জামায়াতের বুদ্ধিজীবি শাহ আব্দুল হান্নানের ক্ষেত্রেও, তিনি একুশে টিভি’র এক অনুষ্ঠানে বলে বসলেন; ৭১ সালে বাংলাদেশে “গৃহযুদ্ধ” হয়েছিল।সেই থেকে তিনি টিভি থেকে নির্বাসিত! প্রকৃত কথা হচ্ছে, মনের ভেতর লালন করা কথা/চিন্তা কোন না কোন সময় মুখ ফসকে বেরিয়ে আসেই।জনাব মুজাহিদ এর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিয়মান হয়। প্রশ্ন হচ্ছে এ থেকে কি জামায়াত শিক্ষা নেবে?
বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী কুবলার রশ এর বিখ্যাত একটি থিওরি রয়েছে। দু:খজনক কোন ঘটনায় (যেমন মৃত্যুর সংবাদ) মানুষ মনোগতভাবে কিভাবে রিয়েক্ট করে সেটা নিয়ে তিনি বলেন;
১. প্রথমেই মানুষ অস্বীকার করে(Denial)
২. এরপর রাগ দেখায় (Anger)
৩.এরপর দর-কষাকষি করে (Bargaining)
৪. তারপর হতাশ হয়(Depression)
৫. সবশেষে মেনে নেয়া (Acceptance)
এই ধাপগুলো একটার পর আরেকটা ঘটবে এমন বাধ্যকতা নেই, সবারজন্য সমানভাবে ঘটবে তাও নয় তবে এটি একটি সাধারন প্রবণতা।সুত্রটা প্রথমে ব্যক্তির জন্য বলা হলেও পরবর্তীকালে সংগঠনেও প্রয়োগ করা হয়। বাংলাদেশ জামায়াতকে বুঝার জন্য এই থিওরি বেশ কার্যকর।বাংলাদেশের জামায়াতের এখন যেই অবস্থা তা বুঝার জন্যও এই থিওরির সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
৭১ নিয়ে শুরু থেকেই জামায়াতের মধ্যে এক ধরনের Denial (অস্বীকার) মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।একই ধারাবাহিকতায় ২০০৭-২০০৮ সালে যখন আওয়ামীলিগ যুদ্ধাপরাধের বিচার বিষয়টা সামনে নিয়ে আসে তখনোও একই ধরনের Denial (অস্বীকার) মনোভাব দেখা যায়।আমরা করিনি,১৯৭৩ সালে শেখ মুজিব কর্তৃক ক্ষমা দিয়ে দেয়া হয়েছে,আমরা রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তান সাপোর্ট করলেও অপরাধের সাথে ছিলাম না…ইত্যাদি কথা বলতে শোনা গেছে।।মোদ্দাকথা,৭১ ইস্যুটাই জামায়াত-শিবিরের লোকদের মাঝে এক ধরনের ডিনায়াল,একই সাথে হীনমন্যতার সৃষ্টি করে। তর্কের টেবিলে তারা নেতাদের শেখানো যুক্তিগুলোই বারবার পূনরাবৃত্তি করে।কিন্তু কোনটা যুক্তি আর কোনটা কু-যুক্তি এই বিষয়টা না বুঝেই ইসলামকে ঢাল হিসেবে নিয়ে তর্ক করে যাওয়া আসলে কিছুই না-স্রেফ ৭১ এর জাতীয় অর্জন কে Denial (অস্বীকার)।
৭১ সালে বাংলাদেশ নামে একটি দেশের premature (অকাল) জন্ম হয়েছে। বাংলাদেশ নামক বাচ্চা যখন গর্ভে তখন জামায়াত একে চিত্রায়িত করেছে অনেকটা বাপহীন সন্তান হিসেবে।অথচ স্বাধীনতা পরবর্তি সেই রাষ্ট্রেরই পিতা হওয়ার চেষ্টারত থাকতে দেখা গেছে জামায়াতকে।এক দিকে অস্বীকার অন্যদিকে বাবা হওয়ার প্রচেষ্টা-এই দ্বান্ধিক জায়গায় জামায়াত কখনোই সামঞ্জস্যবিধান (Reconcile) করতে পারেনি।আওয়ামীলিগ যখন ভারতের দিকে বেশ কিছুটা ঝুঁকে পরেছে তখন তাদেরকে বলতে শোনা গেছে; “৭১ এ আমাদের অবস্থানই সঠিক ছিল”!
যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ২০০৮ সালেই জামায়াতকে সতর্ক করা হয়।এর পেছনে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী শক্তির সক্রিয় অবস্থান জানানো হয়। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়ে তেমন একটা কর্ণপাত করেনি।একে একে শীর্ষ নেতাদের যখন ধরা শুরু হল তখন কারো কারো হুঁশ ফেরে।নেতা-কর্মিদের মাঝে দেখা দেয় রাগ (Anger)।প্রতিবাদ, মিছিল আর সাথে অনলাইনে প্রোপাগান্ডা।আব্দুল কাদের মোল্লা’র ফাঁসি’র মাধ্যমে তারা বুজতে পারে “অস্বীকার এবং রাগ” দেখিয়ে আর হচ্ছেনা।তখন তারা ক্ষমতাসীনদের সাথে বিভিন্নভাবে “দর-কষাকষি” করার চেষ্টা করে।কিন্তু কামারুজ্জামানের ফাঁসির পর বুঝা যায় “দর-কষাকষি” কাজ করেনি, কারন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার একক সীদ্ধান্তে চলছে যুদ্ধাপরাধের বিচার।জামায়াত শিবিরের অনেককেই দেখা গেছে তখন হতাশা দেখাতে।
Denial>Anger>Bargaining>Depression>Acceptance স্টেইজে পৌঁছুতে জামায়াত গুরুত্বপূর্ণ আরো একজন নেতাকে হারালো।দলের প্রধান মতিউর রহমান নিজামি’র ফাঁসিও আসন্ন বলে প্রতিয়মান।জামায়াত মেনে নিয়েছে বাস্তবতা।যার কারনে আগের মত সেই জৌলশ নেই মাঠে। মাঝে মাঝে অনেক দাম দিয়ে শিক্ষা নিতে হয়।৭১ ইস্যুতে তাদের Denial মানসিকতা থেকে শিক্ষা নিতে এত দাম দিতে হবে জামায়াত হয়ত কখনো কল্পনাও করতে পারেনি।কোন কিছুকে অস্বীকার করলেই যদি সমস্যার সমাধান হয়ে যেত তাহলে জামায়াত আজকের এই অবস্থানে আসত না। এক্ষেত্রে বলে নেয়া ভাল যে, নৈতিকভাবে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী কর্মের বিচারের সমর্থক হলেও বিচার প্রক্রিয়ার অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতা এবং অন্যান্য অনিয়ম লক্ষ্য করে বহু আগেই বিচারের নামে এই অবিচারকে বেদরকারী অনুশীলন বলে আমি মত দিয়েছিলাম।কিন্তু জামায়াত সেখানে অংশগ্রহন করেছে।সাংবাদিক ওলিউল্লাহ নোমান খুব সুন্দরভাবে সেটা তুলে ধরেছেন তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে;
“রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে যেই বিচার প্রক্রিয়া চলতেছে তাতে অংশ গ্রহন করছে জামায়াতে ইসলামী। বিচারের প্রতিটি ধাপে তারা আইনের কেতাব এবং যুক্তি উপস্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে। তবে ‘ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি’র দাবীতে গঠিত ট্রাইব্যুনালটি ছিল একটি রাজনৈতিক আদালত। এর বিচারক হিসাবে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তারা সবাই আওয়ামী-বাম রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিচারক হওয়ার আগে তারা এই নেতাদের ফাঁসির দাবী জানাতেন রাজপথে। বিচারকের আসনে বসে তারাই আবার ফাঁসির আদেশ দিচ্ছেন। সুতরাং তাদের কাছে আইনের কেতাব বা যুক্তি বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক চিন্তা, দর্শনের আলোকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। এই বিষয় গুলো জামায়াতে ইসলামী বুঝেও বিচারে অংশ নিয়েছে। তাদের কথা গুলো বলেছে আদালতে। তবে নেতাদের এভাবে একের পর এক ফাঁসি হয়ে যাবে এটা হয়ত: অনুধাবন করতে সক্ষম ছিলেন না” (১৯ নভেম্বর, ২০১৫)।
কিন্তু এই ফাঁসি বা বিচারিক হত্যাকান্ড ই যে জামায়াতকে ৭১ ইস্যুতে মুক্তি দেবেনা সেটা নিশ্চিত।সেজন্য এর সূদুর প্রসারী প্রভাব নিয়ে নতুন করে ভাবনার জরুরত এখনো শেষ হয়ে যায়নি।কেননা বাংলাদেশের অস্তিত্ব যতদিন থাকবে,৭১ সাল বার বার ফিরে আসবেই এবং জামায়াতের ভূমিকা আগত-অনাগত ভবিষ্যতের কাছে প্রশ্নবোধক হয়েই থাকবে।
৭১ ইস্যুতে জামায়াতের অভ্যন্তরেও যে আলোচনা পর্যালোচনা হত সেটা অনেকেরই জানা ছিলনা।আইএমবিডি ব্লগটি আমার নজরে আসার পর এই ধারনায় পরিবর্তন হয়।চমৎকার আয়োজন এই ব্লগে,মনে হচ্ছে জামায়াত নিয়ে গবেষণা,পর্যালোচনা করার অনেক প্রাথমিক তথ্য, উপাত্ত এখানে রয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়,৭১ ইস্যুতে যদি জামায়াতের অভ্যন্তরে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়েই থাকে তাহলে আজ পর্যন্ত তারা কেন একটি নৈতিক ব্যখ্যা নিয়ে জাতির সামনে আসতে পারলনা? এই প্রশ্ন যখন আমি জামায়াতি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করতাম তাদের অনেকেই প্রায় একই ধরনের যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করত।নৈতিক, কৌশলগত ও রাজনৈতিক একটি প্রশ্নের উত্তরে তারা অহেতুক ধর্মীয় ন্যারেটিভস নিয়ে আসে।বলার চেষ্টা করে যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলন,ইসলামের বিরোধীতা করেছে ইসলাম বিরোধী শক্তি এবং বর্তমানে আছে, ভবিষ্যতে থাকবে…
এই ন্যারেটিভসে তারা ৭১ প্রশ্ন থেকে এক ধরনের পলায়ন করে এবং ইসলাম প্রশ্ন হাজির করে! ইসলাম প্রশ্নে জামায়াত নিজেকে ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করে এবং উদাহরন হিসেবে আরবদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক ইসলামিক গোষ্ঠির সাথেও তুলনা করে।ব্যাপারটা হাস্যকর। কেননা, ইসলাম প্রশ্নে যদি জামায়াত ভিকটিমই হয়,তাহলে ঘাড়ের উপর আরেকটি ইস্যু (৭১ ইস্যু)ঝুলিয়ে রাখা কেন?
কোন সদুত্তর?
(চলবে)
পরের পর্বঃ জামায়াতবাদের সংকট-২
জনাব আনোয়ার মোহাম্মদ,
আপনার লেখার শিরোনাম ও দৃষ্টিভঙ্গিতে আপনি নিজেই বিভাজন তৈরি করেছেন! রেফারেন্স দিলেন একটা আর বললেন আরেকটি!! প্রথম আলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে জনাব মুজাহিদ সাহেবের উক্তিটি ২০০৭ সালের আর আপনি বললেন তিনি নাকি মন্ত্রীত্বের গরিমায় এরকম দাম্ভোক্তি করেছেন!!! দেখে নিন—বিএনপি-জামায়াতের সর্বশেষ শাসন কাল ২০০১–২০০৬ এর ২৬ অক্টোবর ইতিহাস!!!
আর ৭১-যে জামায়াতের রাজনৈতিক বড় একটি সংকট সেটা শুধু আপনি কেন দেশের মফস্বল এলাকার যেকোনো জামায়াত-শিবির কর্মী এমনকি সমর্থক পর্যন্ত সবাই জানে। কাজেই এটাতে আপনার নতুত্বের কোনো বাহাস নেই। তবে ৭১ নিয়ে জামায়াতকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন সেটাতে যথেস্ট আপত্তি ও আপনার একগেঁয়েমি মনোভাব রয়েছে!! তার আগে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিবেন প্লিজ…..
১. ৭১ প্রশ্নে আওয়ামীলীগের দৃষ্টিতে অভিযুক্ত মজলুম নেতাদের প্রায় সবারই ফাঁসি হয়ে যাচ্ছে। এমনকি আগামী বছরের শেষ দিকে জামায়াত নিষিদ্ধও হতে পারে। অর্থাৎ ৭১’র কেন্দ্রিক জামায়াতের সংকট আদালত কৃর্তক প্রায় মীমাংসিত হতে যাচ্ছে!! তারপরও কি তথাকথিত চেতনাবাজরা ৭১’র মিথ্যা কাঁদা জামায়াত-ছাত্রশিবিরের দিকে ছোড়ঁবে????
উত্তরটা যদি ‘হ্যা’ সূচক দেন তাহলে আপনার দৃষ্টিতে ৭১-প্রশ্নে জামায়াতের সংকট দেখানোটা গাজাখুরি ও অবান্তর!! পোস্টটিও ডিলিট হবার দাবি করবে!! কারণ অাপনি ১৯৭১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত জামায়াতকে বিবেচনা করেছেন বাট জামায়াত যখন ৭১’র সংকট আদালত কৃর্তক কেটে উঠবে সেই সময়টাকে কৌশলে এড়িয়ে গেলেন!!!! যদি ‘না’ বলেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে জামায়াতের দাবিই ঠিক ছিল!! ( অর্থাৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগ ৭১-কে ইউজ করছে)।
২। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে সংকট (অনেকের ফাঁসি, বাকীরা জেলে, ২/১ জন বিদেশ ও ব্যবসায়), তৃণমূলের শত শত নেতাকর্মী জেলে ও বাহিরে যারা আছেন সবাই আত্মগোপনে, কেন্দ্রের ২য় ও তয় সারির প্রায় সবাই জেলে, বাহিরে যারা আছেন তারাও দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে, সারাদেশের অফিসগুলো বন্ধ…….জামায়াতের এমন নাজুকচিত্র দেশের প্রথম সারির পত্রিকাগুলো প্রায়শই দেখাচ্ছে। জামায়াতের নেতৃত্বে যে সংকট আসছে সেটা বুঝাচ্ছে!! যা বাস্তবও বটে! তারপরও কেন আপনি আদালত কৃর্তক মীমাংসিত হতে যাওয়া ৭১-প্রশ্নে জামায়াতবাদে (আপনার ভাষায়) সংকট দেখলেন????
৩। ১৯৯৬ তে তত্তাবধায়ক ইস্যুতে আওয়ামীলীগ কেন জামায়াতের সাথে যৌধভাবে আন্দোলন করেছে???
৪। ১৯৯১ তে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কেন আওয়ামী প্রার্থী বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী অধ্যাপক গোলাম আযমের পা ছুঁয়ে দোয়া চেয়েছেন????? তখন কি তিনি যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না??
৫। বর্তমানে যারা জীবনবাজি রেখে দলের সংকটমূহুর্তে দায়িত্বপালন করছেন যারা কি গ্রুপিংয়ে জড়িত?? —দেখুন স্বয়ং ব্লগ এডমিনের ধারনা—- http://imbdblog.com/?p=7813
আর জনাব মুজাহিদ সাহেব যে আওয়ামীদের কাছে মাথানত করেননি অর্থাৎ তার গায়ে ৭১’র কাঁদা লাগেনি। সেটারও প্রমাণ, উনার ছেলে আলী আহমাদ মাবরুরের লেখাটি—-http://imbdblog.com/?p=7846
পাশাপাশি দেখুন গৃহপালিত ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ও ঘাদানিকের আইন সম্পাদক তুরিন আফরোজ নিজ মুখে স্বীকার করেছেন জামায়াতের নেতাদের চারিত্রিক মাধুর্যের কথা——————-https://www.youtube.com/watch?v=3D-IUJToSb0
বাকীটা দ্বিতীয় কমেন্টে দেখুন………………..
দু:খিত লিংকটি কাজ করছে না। এখানে দেখতে পারেন,
আলী আহমাদ মাবরুর—-http://imbdblog.com/?p=7846
তুরিন আফরোজের মন্তব্য—https://www.youtube.com/watch?v=3D-IUJToSb0
আপনার স্ট্যান্ড পয়েন্ট নিরেট অস্পষ্ট!! বারবার ডিগবাজি খেয়ে বিভিন্নদিকে শিফট খেয়েছে!! কখনো জামায়াতবাদের (আপনার ভাষায়) সংকট জামায়াত নেতাদের দম্ভোক্তির মাঝে, কখনো ইতিহাস থেকে শিক্ষাহীনতার জন্য আবার কখনো ৭১’র মাঝে সংকট খুজেছেন!!
পত্রিকার কাটিং দিয়ে দাম্ভোক্তির সাথে ৭১’র সংকট লিংকআপ করার চেষ্টা করেছেন!! বিষয়টি কি এমন না যে, জামায়াত নেতারা ৭১’র আওয়ামীদের উত্থাপিত অভিযোগগুলোর ধারের কাছেও ছিলেন না, সেটারই পক্ষে জোড়ালো ও স্পষ্ট কন্ঠ !!
প্রশ্ন থাকল অাপেক্ষিক বিষয়ে দম্ভোক্তি (অহংকার) ও সত্যের পক্ষে বলিষ্ঠ কন্ঠ কি এক জিনিস??????
স্পষ্টতই আপনি ফ্যালাসি তৈরি করেছেন! এমনকি নিজেও গুলিয়ে ফেলেছেন!! আর সাইকোলজিস্ট কুবলার-রস থিউরির একটি মনগড়া ব্যাখ্যা দিলেন!! আমি নিশ্চিত জনাব কুবলার-রস জানতে পারলে তার সূত্রের অপব্যখ্যার দায়ে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করত!!
যাই হোক ছোটবেলার ‘একটি গুরু রচনার’ কথা মনে পড়ে গেল!! প্রশ্নে যাই আসুক গরুকে ব্যবহার করতেই হবে!! নদীর রচনা আসলে গরুকে নদীতে নামিয়ে গরুর গুনগান!!!
জনাব কুবলার-রস স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন যে, তার থিউরিটি ‘‘‘Denial>Anger>Bargaining>Depression>Acceptance অর্থাৎ —–নেহায়েত ইমোশনাল স্টেইজের জন্য কার্যকর!! আর আপনি………………….??????
সবার জন্য লিংকটি দিয়ে দিলাম—https://en.wikipedia.org/wiki/K%C3%BCbler-Ross_model
যেটি জামায়াত সম্পর্কে আপনার Exclusive মনোবৃত্তির বহি:প্রকাশ ঘটায় not Inclusive!!
আশ্চর্যজনক হলো, আপনি ইমোশনাল একটি থিউরির সাথে ইতিহাসের সত্য-মিথ্যা সংবলিত একটা ঘটনার কানেটিভিটি খুজলেন!! যেখানে জামায়াত স্পষ্ট করে বলে আসছে তারা একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ করেননি! এমনকি সরকার জনাব মুজাহিদ সাহেবকে দিয়ে সেটা প্রমাণ করার জন্য প্রাণভিক্ষার নামে অপ্রচারও চালিয়েছে। যার প্রমাণ আগের কমেন্টে দেখুন। তারপরও কোথায় আপনি কুবলার-রসের Acceptance বা স্বীকার করার চিরকুট খুজে পেলেন??????
আর দর কষাকষির সাথে শুধুমাত্র শহীদ কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের বিষয়টি মিলালেন!! কেন ভাই!! সমঝোতা করলেই কি লীগ শহীদ কাদের মোল্লা-কামারুজ্জামানসহ জামায়াত-ছাত্রশিবিরের শতাধিক শহীদ ভাইকে জীবিত ফিরিয়ে দিত নাকি??? যতসব আজগুবি তথ্য দিয়ে Bargaining এর সাথে কাহিনী রচনা করলেন!!!
আর দরকষাকষির ব্যাপারে কি প্রমাণ দিন?????
যদিও আপনি জামায়াত প্রসঙ্গে DABDA এর পয়েন্ট বাই পয়েন্ট ব্যাখ্যা দেননি!! শুধুমাত্র ধারনাপ্রসূত সমীকরণ দাঁড় করিয়েছেন!!! তবে সত্যের পক্ষে বলিষ্ঠ কন্ঠকে Anger নাম দিয়ে স্বয়ং রাগ নামক শব্দের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন নয় কি………..???
পরিশেষে জামায়াত শুধুমাত্র ইসলামি রাজনীতি করার জন্যই না, দেশের রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অন্যান্য ইসলামি দলগুলোর মতো ওয়ানম্যান নির্ভর দল হলে নিশ্চয়ই আওয়ামীদের রোষানলে পড়তে হতো না, তাই না??
লাষ্ট প্রশ্ন—–একাত্তরের তকমার জন্য দল হিসাবে কেন (নট ব্যক্তি হিসাবে, নট ফজলুল কাদের চৌধুরী) মুসলিম লীগ ও নেজামে পার্টির বিচার হচ্ছে না কিংবা নিষিদ্ধ হবার দাবি উঠছে না?? যদিও এই দলগুলো এখনও বাংলাদেশে জীবিত!
আপনার মন্তব্যই বরং আমার আর্গুমেন্ট প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ঠ।আমি যা বলতে চেয়েছি আপনি সেটা উদাহরন হয়ে প্রমাণ করলেন।যাই হউক এটা নিশ্চয়ই জামায়াতের সবার মতামত নয় বলে আমি মনে করি। আপনি এখনো Denial স্টেইজে আছেন।
আর একটা কথা, আপনি দয়াকরে নিজের বুঝ অন্যের উপর চাপানো থেকে বিরত থাকুন।”আপনি বুঝিয়েছেন”, “আপনি বলতে চেয়েছেন” এই জাতীয় পরিভাষা জঘন্য,কেননা আমি যদি বলি আমি ঐটা বুঝাইনি তাহলে আপনি মিথ্যা প্রতিপন্ন হন অথবা ধারনার পাপে পাপি হন।আমি কি বুঝিয়েছি সেটা লেখায় স্পষ্ট,পাঠককে সেটা বুঝতে দিন।আর আপনি যেটা বুঝেছেন সেটাকে বলতে চাইলে বলুন; আমার মনে হয়েছে…আমি আপনার লেখাগুলো ঘুরে আসলাম,একই অবস্থা দেখি ওখানেও। আপনাকে আমার বক্তব্য টেম্পার করার অনুমতি কে দিয়েছে?
@এডমিন, এই জাতীয় মন্তব্য সম্পাদনা করা প্রয়োজন।অন্যথায় এখানে লেখালেখি করা সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ
##### ‘‘‘ আপনি এখনো Denial স্টেইজে আছেন’’’—–এটা দ্বারা কি আমার উপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়া হলো না???
বিতর্ক তো আমার ও আপনার মাঝে হচ্ছে। তবে এখানে এডমিন মহোদয়কে কেন ডাকলেন??? আর আমার অবস্থানটার বিপরীতে তো কোনো ব্যাখ্যা দেখছি না?? শুধুমাত্র লেখার স্টাইলে বিরক্তবোধ!!
যেহেতু আপনি লিখেছেন—-তাই আপনাকে কৌট করেছি মাত্র!! এখানে তো জঘন্যতার কিছু নেই!! তারপরও যদি অভিযোগ ও আপত্তি থাকে—Then I am ready to Correct!!
কই আমার প্রশ্নগুলোর কোনো প্রকার জবাব তো পেলাম না???
আর হ্যাঁ আমিও তো একজন পাঠক, তাই না??
আর একটি রিকোয়েস্ট………….
অন্যান্য ব্লগ স্পেশালি সামহ্যোয়ারইন বাংলা ব্লগ ও টুডে ব্লগ, বিজয় বায়ান্ন, মুক্তমনা, ইস্টিশন—ইত্যাদি ব্লগগুলোতে দেখতে পারেন——কিভাবে তর্ক-বিতর্ক হয়!!
যারা সত্য বলতে জানে, তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে জানে!!!
হয়ত আশানুরুপ কোনো জবাব না পেলে আপনার পোস্টে আর কোনো দিন মন্তব্য করব না!!
ধন্যবাদ
অল দ্যা বেস্ট………..